লকডাউন ডায়েরি
উদ্দালক বিশ্বাস
উদ্দালক বিশ্বাস
পর্ব ১: সূচনা
আমার বাড়ি মুর্শিদাবাদের একটি ছোট্ট শহরে, নাম রঘুনাথগঞ্জ। আমার প্রথম কলকাতায় আসা বাবার চিকিৎসার জন্য ২০০৭ সালে। তারপর এলাম ২০১১ তে, আর ফেরা হয়নি। প্রথমদিকে শহরটাকে বড্ড প্রাণহীন আর রুক্ষ মনে হয়েছিল, তাই সুযোগ পেলেই এই শহর থেকে নিজের শহরে পালিয়ে যেতাম। পরবর্তী সময়ে পারিপার্শ্বিক পরিবেশের চাপে আমার শহরে যাওয়ার প্রবণতা কমে গেলো। কলকাতাও এই কদিনে আমার কাছে নতুন রূপে ধরা দিলো। আস্তে আস্তে এই শহরের সবকিছু আমার কাছে চেনা আপন, ও নিজের হয়ে উঠতে লাগলো।
আজকে আমার চোখে দেখা এই কলকাতার পরিবর্তনের কথা বলবো এক মহা সংকটের সময়ে। যখন চারিদিক থেকে নাগপাশের মতো প্রকৃতি আমাদের জাপটে ধরেছে আষ্টে পৃষ্ঠে।প্রকৃতি যেন তার প্রতি এই সভ্য জাতির করা সমস্ত অবজ্ঞা, অন্যায়ের প্রতিবাদ করছে, যা ঘনীভূত হয়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যে আছড়ে পড়ছে আমাদের ওপর। শুধু কলকাতাবাসীর ওপর নয়, সমস্ত মানবজাতির ওপর এই ভাবেই আগ্রাসন দেখাচ্ছে প্রকৃতি তথা, প্রকৃতির আদিমতম জীব। গোটা বিশ্ব এখন থমকে, তাবড় তাবড় বিজ্ঞানীরা হিমশিম খাচ্ছে পরিস্থিতি সামাল দিতে। প্রকৃতিও বুঝিয়ে দিচ্ছে নিজেদের সর্বশক্তিমান ভাবা জীবদের, যে তারাও প্রকৃতির সামনে কতটা ক্ষুদ্র, কতটা তুচ্ছ , কতটা দুর্বল। চীন দেশে প্রথম প্রাদুর্ভাব ঘটে এই আণুবীক্ষণিক জীবটির। জীব বলা ভুল, ছোটবেলায় জীবনবিজ্ঞান বইয়ের ' ইহা এক অদ্ভুত বস্তু ' যা জীব ও জড়ের মাঝামাঝি। পৃথিবী সৃষ্টির প্রাক্কালে এদের উৎপত্তি। চীন দেশে এদের এক নতুন প্রজাতির কথা জানা যায় যেটা কিনা মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ে । এতদিন বার্ডফ্লু , সোইনফ্লুর বাহক ছিল নিরীহ প্রাণী, সেই সব প্রাণী থেকে ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করতো। মানুষ ব্যাতিত অন্য প্রাণী মূল্যহীন, তাই ওদের মেরে ফেলে রোগ মুক্তির পথ বাতলানো হতো। কিন্তু এক্ষত্রে মুশকিলটা হলো বাহক প্রাণীটি মানুষ, তাই তাকে মেরে ফেলে রোগমুক্তি সম্ভব নয়। অতএব ঠিক করা হলো এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রুখতে মানুষে মানুষে মেলামেশা বন্ধ করা হোক। মানুষকে করা হোক গৃহবন্দী। চীন দেশেই প্রথম এই পন্থা প্রয়োগ করা হলো, তাতে সেই দেশের সংক্রমণ কিছুটা আটকানো গেলেও পৃথিবীর নানা প্রান্তে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়লো। মানুষের দ্রুত গতিতে একস্থান থেকে অন্যস্থানে যাওয়ার পরিকল্পনা যে কোন দিন তাদেরই জীবনে বুমেরাং হয়ে ফিরে আসবে তা ভাবনার বাইরেই ছিল। পৃথিবীর সমস্ত বড় শহর আস্তে আস্তে চলে গেলো এই ভাইরাসের গ্রাসে। কলকাতা, আমাদের তিলোত্তমা কলকাতাও বাকি রইলো না। একটা স্রোতস্বিনী নদীকে হঠাৎ করে বাঁধ দিয়ে আটকে দিলে যেমন হয় কলকাতারও ঠিক তেমন ই অবস্থা হলো। গলা ফাটিয়ে কাঁদতে থাকা বাচ্চাকে জুজুর ভয় দেখিয়ে জোর করে কান্না থামানোর ন্যায়, কলকাতারও সমস্ত চলাফেরা বন্ধ করে দেওয়া হলো এক অজানা বিপদের ভয় দেখিয়ে। ২৩ মার্চের রাতে যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেন এবার নোট নয় দেশ বন্দি আগামী একুশ দিনের জন্য সেদিন মানুষ হঠাৎ করেই এক অজানা আতঙ্কে ঝাঁপিয়ে পড়লো বাজারে, কয়েক ঘন্টার মধ্যে বাজার ফাঁকা। যাদের সঞ্চিত ধন অধিক, তারা পণ্য সঞ্চয়ও করলো অধিক। সমাজের ধনবৈষম্য যে কতটা এই ঘটনা তা সকলের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো। শীত শুরুর আগে পিঁপড়েরা যেমন খাবার সংগ্রহ করে, আর সেই খাবারের পরিমানের ওপর নির্ভর করে তাদের শীতকালে বেঁচে থাকা। একুশ দিনের দেশবন্দি মানুষকে সেই পিঁপড়ের পর্যায়ে নিয়ে গেল।
আমার বর্তমান ঠিকানাটি এমন জায়গায় প্রত্যহ যান্ত্রিক পাখিরা উড়ে যায় মাথার ওপর দিয়ে। এই বিমান এরই যান্ত্রিক আর্তনাদে অভ্যস্ত আমার কান। কখনো অবসরে আকাশের দিকে তাকিয়ে শুধু লাইন দিয়ে তাদের আনাগোনা লক্ষ্য করতাম। দেশবন্দীর সুযোগে সেই যান্ত্রিক পাখিগুলি কোথায় উধাও হয়ে গেলো। তার বদলে এলো আকাশে চিল , ফিঙে ,বকদের সারি যারা যান্ত্রিক নয়। মানুষের বন্দী দশা দেখে তারা উড়ে বেড়াতে লাগলো আকাশে। মানুষ স্থলে জলে জঙ্গলে আকাশে বাতাসে কোথাও কারোর জন্য জায়গা ছেড়ে রাখেনি। নির্বিকারে গাছ কেটেছে, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে বন , দূষিত করেছে জল, অধিকার করেছে আকাশ যান্ত্রিক দানবে। প্রকৃতি আজ সমস্ত কিছু পুনরুদ্ধার করছে।
দিন যত এগোলো নিত্যনতুন ঘটনার সাক্ষী হলাম আমি। আমিও বন্দী, সেজন্য আমার অভিজ্ঞতাও বন্দী এবং সীমিত। তবুও এই সীমিত অভিজ্ঞতাই অন্যান্য সাধারণ দিনগুলির থেকে অনেক অংশে আলাদা। মেয়াদ বৃদ্ধির সাথে সাথে মানুষের খাদ্যাভাব, অর্থাভাব প্রকট হয়ে উঠতে লাগলো। কেউই এই অভূতপূর্ব অবস্থার জন্য একেবারেই প্রস্তুত ছিল না। চারিদিকে অস্ফুট হাহাকার যেন কানে আস্তে লাগলো, 'একমুঠো অন্ন চাই,বাঁচতে চাই'. বহু মানুষই জীবিকার টানে ও অন্যান্য প্রয়োজনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে। এমতবস্থায় তাদের জীবিকা বন্দীর তালিকাভুক্ত হলো, অতয়েব তারা ফিরতে চাইলো নিজের মাটিতে, বাঁচার তাগিদে। কিন্তু সমস্ত চাকার গতি আজ স্তব্ধ, সভ্যতার শুরুতে যে চাকা চলতে শুরু করেছিল এই প্রথমবারের জন্য তা থামলো। অগত্যা শ্রমজীবী মানুষ পায়ে হেঁটেই রওনা দিলো বাড়ির উদ্দেশ্যে। অনাহার ও পায়ে হেঁটে ঘরে ফেরার ধকল সামলে উঠতে পারলো না অনেকেই, মাঝ রাস্তায় মারা গেলো তারা। ট্রেনে চাপা পড়ে , ট্রাকে চাপা পড়ে মারা গেলো আরও অনেকে। সমাজের কঙ্কালসার ভাবমূর্তি বাইরে বেরিয়ে পড়তে লাগলো ক্রমশ। ডারউইনর ন্যাচারাল সিলেকশন বলে প্রকৃতির প্রকোপ পরীক্ষার মাধ্যমে সর্বশক্তিমান বেছে নেয়। এক্ষেত্রে মানুষ প্রকৃতির সেই পরীক্ষা পদ্ধতিকে মিথ্যে করে টাকা ও ক্ষমতার জোরে অন্য মানুষের অধিকার খর্ব করে উঠে যেতে লাগলো ওপরে।
পর্ব -২: ফিরে এসো প্রকৃতি
জানালার বাইরে তাকালে মনে হয় এ এক কাল্পনিক জগৎ। কলকাতার বায়ুকে যে আমরা দিনে দিনে কতটা বিষাক্ত করে তুলেছি বন্দীদশায় বাইরে তাকালে পার্থক্য করতে কোনও অসুবিধা হয় না। ছাদে গিয়ে দাঁড়ালে যে কংক্রিটের জঙ্গল আধো কুয়াশায় ঢাকা বলে মনে হতো, তা এখন কাঁচের মতো স্বচ্ছ দেখা যায়। উত্তর কলকাতার শহরতলি থেকে অনেক দূরে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলে হাওড়া ব্রিজের মাথা দেখতে পাওয়া যায়। রোজ যেমন ডুবন্ত সূর্য ঝাপসা হয়ে যেত এখন তেমন হয় না, আকাশে রং বেরঙের খেলা দেখায়। সময় আরও কিছুদিন গড়ালে পরিবর্তনটাও আরও স্পষ্ট হতে থাকে। অহরহ পায়ের চাপে যে তৃণরাশি কখনো মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি, সেই তৃণরাশিই এখন দাঁড়িয়ে সূর্য্য প্রণাম করে,শহর গড়ে ওঠার আগে এই জনপদও একদিন প্রকৃতির নিরবিচ্ছিন্ন অঙ্গ ছিল।আমরা মানুষেরাই যে সেই নাড়ির টান অস্বীকার করে দূরে সরে যাচ্ছিলাম, প্রকৃতি সস্নেহে তা বুঝিয়ে দিলো। সন্তান মায়ের ওপর হাজার অত্যাচার করলেও, বিপদে পড়লে মা সন্তানকে যেভাবে আঁকড়ে ধরে বাঁচাতে চায়, তেমনি নিজেকে সন্তানের বাসোপযোগী করে তুলতে চেষ্টা করলো। নেড়া মাঠে সবুজ ঘাসদের বেড়ে ওঠা তারই একটি প্রমান.
পর্ব -৩: রাত
যখন গ্রামের বাড়িতে থাকতাম, রাতের আকাশ আমাকে খুব টানতো। সেই সময় আমাদের গ্রামে বৈদ্যুতিক আলো ছিল না, তাই আকাশের থালা ভরা তারা দেখে অনেকটা সময় কাটিয়ে দিতাম।কলকাতায় বৈদ্যুতিক আলোর আধিক্যে এবং বায়ুদূষণের সুবাদে সেই সুযোগ প্রায় নেই বললেই চলে। হাতে গোনা কয়েকটা তারা দেখতে পাওয়া যায় কখনও কখনও কোনও বৃষ্টিস্নাত রাত্রে। আকাশটাও এই সুযোগে মুছে চকচকে করে দিয়েছে ধরিত্রী মা। এই কয়েক বছরে যা অভিজ্ঞতা হয়েছে তাতে আমাদের কলকাতা রাত্রে বেলাতেও সমান প্রানোচ্ছল থাকে। ছোট-বড়ো গাড়ির শব্দ, দূরে কোথাও মাইকের আওয়াজ, মাঝে মধ্যে আকাশে দৈত্যাকার বিমানের গর্জন প্রতি রাত্রেই শোনা যায়। কিন্তু কয়েক মাস ধরে সবই কেমন যেন নিস্তুপ, থমথমে। এই মহানগরীর এমন নিস্তব্ধ শান্তরূপ আজ অবধি আমি প্রতক্ষ্য করিনি। দিগন্ত বিস্তৃত ইট কাঠ পাথরের বাড়িঘর গুলো দাঁড়িয়ে আছে একদম চুপচাপ। মাঝে মাঝে অনেক্ষন তাকিয়ে থাকলে ভয় হয় যেন এই শব্দহীন নগরী আমাকে গ্রাস করতে আসছে। ইচ্ছে করে চিৎকার করে ঘুম ভাঙাই আমার শহরের। কিন্তু পরমুহূর্তেই ভাবাবেগ চেপে সেই ইচ্ছে দমন করে ফিরে আসি জানলার পাশ থেকে। এই কদিন যাবৎ জানলাটাই আমার বাহির জগতের সাথে একমাত্র যোগাযোগ।
পর্ব ৪: ঝড় আসার আগে
এরকম ভাবেই দিনগুলি কেটে যাচ্ছে ,যতদিন অতিবাহিত হচ্ছে আলোয় মোড়া কলকাতা গভীর অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছে। সেই অন্ধকারের ভেতর থেকে ভেসে আসছে কিছু মানুষের পায়ের শব্দ, আর বাঁচতে চেয়ে আর্তনাদ। ভাইরাসের করাল গ্রাস আরও প্রকট হয়ে উঠলো সারাবিশ্বে। ইতালি, স্পেন আমেরিকা ,ফ্রান্স, রাশিয়ার মতো বিশ্বের প্রথম সারির উন্নত দেশগুলি এই একুশ শতকেও এক ক্ষুদ্র ভাইরাসের পদানত হয়ে যেতে লাগলো, মৃত্যুমিছিল থামবার নয়। আমার শহর ও আস্তে আস্তে মারণ ভাইরাসের কবলে যেতে লাগলো। ভাইরাসের ক্রমবর্ধমান প্রাদুর্ভাবের ফলে ২১ দিনের বন্দীদশার মেয়াদ ধাপে ধাপে বাড়ানো হলো। এতদিনে অনেকটা অভ্যেস হয়ে গিয়েছিলো এই শহরের এমন ব্যবস্থাপনা। পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য অনেক মানুষের সাহায্যের হাতও এগিয়ে এসেছিলো। ঘরবন্দী একা জীবনেও মানুষ ছোট ছোট আনন্দের মুহূর্ত খুঁজে নিচ্ছিলো, একে অপরের পাশে দাড়াচ্ছিলো।
পর্ব ৫: ঝড়
মানুষ যখন ক্রমশ এই অভূতপূর্ব পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিচ্ছে কলকাতার বুকে নেমে এলো আর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ঘূর্ণিঝড় আমফান। কলকাতার জেগে ওঠার মুহূর্তে পুনরায় আঘাত করে মেরুদন্ডটা দ্বিতীয়বারের জন্য ভেঙে দিয়ে গেলো। এবার সবথেকে বেশি আঘাত সহ্য করতে হলো সেই সব মানুষ কে যারা এতদিন জীবিকা হারিয়েছে, খাদ্যাভাবে দিন কাটাচ্ছে। তাদের শেষ সম্বল, মাথা গোঁজার ঠাঁই টুকুও আর অবশিষ্ট থাকলো না। প্রাণটুকু সম্বল করে এসে দাঁড়ালো খোলা আকাশের নিচে। যারা ভিন রাজ্য থেকে হাজার বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে এসে পৌঁছেছিল তাদের ঠিকানায়, তারা দেখলো তাদের বাড়িঘর সমস্ত ধুয়ে মুছে গিয়েছে এই ঝড়ে।এর আগেও অনেকবার অন্য বিভিন্ন নাম নিয়ে ঘূর্ণিঝড় তান্ডব চালিয়েছে কোলকাতার বুকে, প্রতিবারই ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এই মহানগরী, কিন্তু এবারের তীব্রতা অনেকটাই বেশি ছিল। একবিংশ শতাব্দীর সমস্ত উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা কয়েক মুহূর্তের মধ্যে অকেজো করে, মানুষে মানুষে খবরাখবর বিচ্ছিন্ন করে দিলো কয়েকদিনের জন্য।বাঁধ ভেঙে বহু মানুষের বাড়ি ঘরে চলে গেলো জলের তলায়। কলকাতার অলি গলিও চলে গেলো এক কোমর ,কোথাও বা এক গলা জলের নিচে। অনেকদিন পর কোলকাতার মানুষ বিদ্যুৎ ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলো। এই দীর্ঘ অবকাশে দূরভাষ যন্ত্র, গণকযন্ত্র, দূরদর্শন ছেড়ে বাইরে তাকানো এর সুযোগ পেলো, তাকালো কলকাতার দিকে।বাইরে তাকিয়ে চোখের সামনে ভেসে উঠলো কলকতার নগ্ন রূপ। সমস্ত দামী দামী পোশাক, ঝলমলে আলোর গহনা ছেড়ে কলকাতা ধরা দিলো আগল গায়ে। প্রকৃতি মানুষকে আরো কাছাকাছি নিয়ে এলো।
পর্ব ৬: শেষ থেকে শুরু
ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে কলকাতা এর আগেও অনেকবার প্রকৃতির কোপে পড়েছে, সেই বিপদ অতিক্রম করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে সময়ের সাথে সাথে এবারও ঘুরে দাঁড়াবে। আমি যখন এই প্রবন্ধ লিখছি তখন ঝড়ে ভেঙে পড়া অনেক বাড়ি ঘর আবার উঠে দাঁড়াতে শুরু করেছে। এই সময় যাবৎ যে ক্ষত সৃষ্টি হলো কলকাতার বুকে সে ক্ষত হয়তো সেরে যাবে কিন্তু এর ক্ষত চিহ্ন যেন কলকাতাকে এই সময়ের কথা বার বার মনে করিয়ে দেয় । প্রকৃতির সাথে নাড়ির যোগ সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন করার কথা যখনই মানুষের মনে আসবে এই ক্ষতচিহ্ন তাকে ভুলতে না দেয় দিনের শেষে ঘরে ফেরার রাস্তা। এই ভাবেই হয়তো আমিও মনে রাখবো আমার ঘরে ফেরার রাস্তা, একদিন হয়তো ফিরে যাবো আমার শেকড়ে, আমার বাড়িতে - মুর্শিদাবাদে।
----------------X-----------------